1. লোক

মাগুরা অঞ্চলের লোক বিশ্বাস ও সংস্কার

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে নানা ধরণের লোক বিশ্বাস বা সংস্কার বদ্ধমূল হয়ে আছে। শিক্ষিত কিংবা অশিক্ষিত, আধুনিক কিংবা অনাধুনিক কোন বিষয় নয়। জীবনে কতো না সংস্কার মেনে চলছি আমরা। এসব লোকবিশ্বাসের পেছনে দৃঢ় কোন যুক্তিও নেই, আবার এগুলোকে কোনভাবে অবজ্ঞা করার ফুসরৎও নেই। বাংলাদেশ জুড়ে এসব লোক বিশ্বাস মানুষের জীবনে এক প্রকার সঙ্গী হয়েই আছে। মাগুরা জেলার সর্বশ্রেনীর মানুষও কোন না কোন লোকবিশ্বাস মনে প্রাণে লালন ও ধারণ করে আসছে। 

যেমনটি ধরা যাক, কোন স্থানে যাত্রা করা হলো। ঠিক তখনই হাঁচি, অর্থাৎ যাত্রায় বাধা পাওয়া। এখানে হাঁচিতে কি ধরনের দোষনীয় থাকতে পারে তাতে কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই। এটা একটা লোক বিশ্বাস ছাড়া আর কিছু নয়। এমনিভাবে যাত্রাকালে হোঁচট খেলে, দরজার উপরের চৌকাঠে মাথা আঘাতপ্রাপ্ত হলে, কিংবা পরিহিত কাপড় কোন কিছুর সাথে আটকে গেলে  যাত্রার অশুভ লক্ষণ হিসাবে গন্য করা হয়। আবার কোন শুভ কাজে যাওয়ার সময় সামনে বিড়ালের দৌড় দেখলেও বিপদের ইঙ্গিত ধরা হয়। এসব ক্ষেত্রে খানিক থেমে তারপর যাত্রার সূচনা করাকে এর প্রতিকার হিসাবে হিসাবে বিশ্বাস করা হয়। 

আমাদের গ্রাম-বাংলায় প্রায়ই দেখা যায় এক মহিলা আরেক মহিলার চুল আঁচড়ে দিচ্ছে চিরুনি দিয়ে কিংবা উকুন বাচছে। আবার কেউ কেউ একা একাও চুল আঁচড়ায় চিরুনি দ্বারা। এসময় যদি মনের অজান্তে কোনভাবে চিরুনি পড়ে যায় কিংবা কোন কথা দুইজন একসাথে বলে ওঠে সেক্ষেত্রে বাড়িতে অতিথি আগমন হবে বলে ধরে নেওয়া হয়। হাত থেকে ভাতের থালা, বাটি কিংবা গøাস পড়লে এটাকেও অতিথি আগমনের লক্ষণ হিসাবে বিশ্বাস করা হয়। 

দেখা যায়, পরীক্ষা দিতে বেরুনোর আগে মায়েরা তার সন্তানকে কোনমতেই ডিম খেতে দেন না। কারণ, ডিম হলো শূন্যতার প্রতীক। পরীক্ষায় ডিম সদৃশ নম্বর পাওয়ার আশংকায় এমনটি করা হয়।   

কোন শিশুর দিকে যে কেউ বার বার তাকায়, কিংবা চোখের পলকও পড়ে না শিশুটি থেকে। কেউ কেউ শিশুটিকে খুব প্রশংসাসূচক বাক্য শোনায়, এরকমটি হতেই পারে। তবে সব দৃষ্টি শুভ নয়। সব প্রশংসাও শুভ নয়। আমাদের সমাজে এটাকে বলে নজর দেওয়া। আর নজর লাগলেই শিশুটির স্বাস্থ্যের হানি ঘটে এরকমই বিশ্বাস করা হয়। আবার নজর লাগলে শিশুটি বারবার জিহŸা বের করে এরকমও বিশ্বাস করা হয়। এরূপ নজর থেকে শিশুকে রক্ষার জন্য শিশুদের কপালের বা’দিকে বড় কালো কাজলের ফোটা দেওয়া হয়। আবার খাবার সময় যদি কেউ আহারকারীর দিকে অপলক তাকিয়ে থাকে আর আহারকারীর কোনরূপ পেট খারাপ হয় তবে তাকিয়ে থাকা দৃষ্টিকেই বদনজর হিসাবে দায়ী করা হয়। 

আরো একটি বিশ্বাস মানুষের মাঝে দেখা যায়। আর সেটি হলো বাম হাতের তালু চুলকালে না-কি টাকা খরচ হয় এবং ডান চুলকালে টাকা উপার্জিত হয়। পায়ের তালু চুলকালে বিদেশ গমনের সম্ভাবনা থাকে।    

অমঙ্গলের আশংকা যেন আমাদের সমাজের মুরুব্বিদের মধ্যে যেন সর্বদা লেগেই থাকে। ঠিক তেমনি সকালবেলায় ঝাড়– দেখলে, ঘুম না ভাঙতেই কাকের ডাক শুনলে, রাত্রিকালে কুক পাখির ডাক শুনলে অমঙ্গলের আশংকা করা হয়। ভোর হতেই কাকের ডাক যেন কোন কোন মানুষের মৃত্যুর বার্তাই বয়ে আনে। এবং কুক পাখির ডাক অসুখ-বিসুখ এর আলামত বহন করে। সকালে ঘুম থেকে উঠে নারীরা ঘর পরিস্কার না করে চুলা ধরালে সংসারের অমঙ্গল হয়। উঠোন ঝাড়– না দিয়ে স্বামীকে বাড়ি থেকে বের হতে দিলে স্বামীর ব্যবসায় ক্ষতি হয়। আবার অমঙ্গল চিন্তায় গাছের নিচে বসে চুল অঁচড়ানো নিষেধ আমাদের সমাজে।এটা অনেকেরই বিশ্বাস। 

ভাজা পিঠা এবং চিতই পিঠা যেন ভুত-প্রেতের প্রিয় খাবার। রাতের বেলায় এই পিঠা কোন মহিলা বহন করলে তার উপর জ্বিন-পরীদের আছর হবে এটাই লোকবিশ্বাস। আর এই ভুত প্রেতের রয়েছে হলুদ ভীতি। তাইতো পিঠা বহনের সময় হলুদ আর কয়লা সাথে দেওয়া হয় পিঠা বহনকারীর।  

কোন স্থানে কেউ যাত্রা করলো আর তাকে পেছন থেকে যে কেউ ডাকলো, এই ঘটনাকে ঐ যাত্রার জন্য অমঙ্গল হিসাবে ধরে নেওয়া হয়। এমন দৃঢ় বিশ্বাস আমাদের সমাজে প্রায়শঃ দেখা যায়। তবে পেছন থেকে যদি মা ডাক দেন, এতে দোষনীয় বা অশুভ কোন কিছু নেই। 

দুধ জ্বালানোর সময় যদি দুধ উতলে পড়ে তাতে আফসোসের কিছু নেই। কারণ এটাকে উন্নতির লক্ষণ হিসাবে গন্য করা হয়। কিন্তু তেল, লবণ, দুধ যদি হাত থেকে পড়ে যায় তাতে মালিকের ক্ষতির আশংকা থাকে। 

আমাদের পাড়া-গায়ে  কুমারী মেয়েদের মাঝে দেখা যায়, রাত্রে শোবার সময় চুল বেধে শুতে। কারণ রাত্রে চুল খোলা রেখে শুতে নেই। এটা দোষের কাজ। রান্নার পর সংসারের পুরুষের আগে মহিলাদের খাওয়াটা খুবই দোষের। এমনটি কোন মহিলা করে থাকলে থাকলে অ-লক্ষী অপবাদ শুনতে হয়। এ বিষয়ে প্রবাদ প্রচলিত আছে আমাদের সমাজে।

যে বা নারী নেয়ে ধুয়ে

পুরুষের আগে খায়

ভরা কলসির জল

তার যে শুকায়

সকালবেলা ঘরদোর ঝাড়– না দিয়ে কাউকে কিছু দেওয়াটাকেও অ-লক্ষীর আচরণ বলে গণ্য করা হয়। সন্ধ্যার পরে মাছসহ বাজার নিয়ে এলে আমাদের গ্রামীন মহিলারা আগুনে সেগুলো ছেঁকে নেন। তা না হলে জ্বিন-পরীদের দৃষ্টি পড়ে ক্ষতির আশংকা থাকে এটাই পল্লী-গায়ের মহিলাদের বিশ্বাস। 

শুধুু মানুষের ক্ষেত্রেই নয় পশু-প্রাণী, গাছ-গাছালি এবং ফসলাদির ক্ষেত্রেও লোক সংস্কার লক্ষ্য করা যায়। শনি-মঙ্গল বারে গোয়াল ঘরে বাইরের কোন লোক ঢুকতে দেওয়া বেশ দোষের এবং অমঙ্গলকর মনে করা হয়। এই দু’ দিনে বাঁশঝাড় থেকে বাঁশ কাটাও নিষিদ্ধ। তাতে বাঁশ-ঝাড়ের ক্ষতির আশংকা করা হয়। যে বছর গাছে বেশি আম ধরে গাছে সে বছর বেশি ঝড়ের আশংকা থাকে। যে বছর গাছে তেতুল এর ফলন বেশি হয় সে বছর ধান হয় বেশি। যদি চিলকে ডাকতে ডাকতে আকাশে উড়ে যেতে দেখা যায় সে বছর বন্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পিঁপড়ার আধিক্য দেখা দিলে বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে।     

রাতকে কেন্দ্র করেও অনেক লোক বিশ্বাস লালন করে থাকে মাগুরা অঞ্চলের অঞ্চলের মানুষ। রাতের বেলা হাড়ি-পাতিল ধোয়া অমঙ্গলকর। রাতের বেলায় বাড়ি থেকে টাকা বের করে কাউকে ধার দেওয়া খুবই দোষের। এতে সংসারে অভাব দেখা দেয় এই বিশ্বাস মানুষের মধ্যে বদ্ধমূল হয়ে আছে। রাতের বেলা বাড়ির গাছে যদি ভুতুম পেঁচা ডাকে তাহলে এটাকে বিপদের লক্ষণ বলে মনে করা হয়। রাতের বেলা সূচ দেওয়া, চুন দেওয়া হয়না অমঙ্গল চিন্তায়।    

বাড়িতে ভিক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মেনে চলা হয়। বিকেল বেলায় ভিক্ষুককে ভিক্ষা দেওয়া অমঙ্গল। ছোট ছেলেমেয়েকে দিয়েই ভিক্ষা দেওয়া ভালো এবং ভিক্ষুককে চাউল দেওয়ার সময় যদি পাত্রে বেশি উঠে যায় তবে সেখান থেকে চাউল কমানো যাবে না। তাতে সংসারের আয়-উন্নতি কমে যেতে পারে বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করা হয়। বাড়িতে কাঁসন্ধ থাকলে কেউ চাইলে না দিলে কাঁসন্ধ নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া, বাড়িতে যে জিনিষ আছে সেটা কেউ চাইলে নাই বললে সংসারে অভাব অনটন লেগে লাকে। এ বিশ্বাস অনেক মজবুত আমাদের গ্রামীন লোক সমাজে। শনি মঙ্গল বারে হলুদ দিতে মানা, পৌষ ও চৈত্র মাসে ঘরের ঝুল ভাঙতে মানা, পৌষ মাসে বিড়াল-কুকুর বাড়ি থেকে তাড়াতে মানা, এসবই আমাদের লোক বিশ্বাস।    

শিশুদের নখ ও চুল কাটার ক্ষেত্রে আমাদের সমাজে রয়েছে কিছু লোক বিশ্বাস। দাঁত দিয়ে নখ কাঁটা আয়ু কমে যাওয়ার আলামত বলে মনে করা হয়। যে বারে শিশুর জন্ম সে বারে চুল নখ কাঁটা যাবে না। শনি মঙ্গল বারে কোন শুভ কাজ করা যাবে না। কোন মা তার সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় যদি খারাপ কিছু ভাবতে থাকে তাহলে তার সন্তান বড় হয়ে চোর, ডাকাত বা সন্ত্রাসী হবে। কিন্তু যদি সে ভালো কিছু ভাবে তার সন্তান বড় হয়ে ভালো পেশার সাথে সম্পৃক্ত হবে। সন্ধ্যাবেলায় শিশুদেরকে নিয়ে বাইরে বের হওয়াকেও অশুভ লক্ষণ বলে বিশ্বাস করা হয়। 

মৃত্যুকে ঘিরে আমাদের সমাজের সমাজে রয়েছে নানা ধরনের লোকবিশ্বাস। বাড়ির মুরুব্বিরা যদি সকালে মারা যায় তাহলে সংসারে সেটা শুভ লক্ষণ। যদি রাতে মারা যায় তাহলে সংসারের ছেলেমেয়েদের অমঙ্গল হয়। কেউ জীবিত থাকতেই যদি কোথাও তার মৃত্যু সংবাদ রটে, লোকবিশ্বাস অনুযায়ী তার আয়ু বৃদ্ধি পায়। তাছাড়া বাড়িতে রোগী অসুস্থ হলে, ডাক্তার ডাকতে গিয়ে যদি দেখা যায় ডাক্তার খাচ্ছে তাহলে রোগীকে বাঁচানো কষ্টকর। যদি দেখা যায় ডাক্তারের খাওয়া শেষ, তিনি পানি পান করছেন বা হাত ধুচ্ছেন তাহলে রোগী বেঁচে যাবে, এই বিশ্বাস মানুষের মধ্যে রয়েছে। কোন মেয়ের পায়ের তালু যদি মাটিতে পুরোপুরি না মেশে তাহলে তার স্বামী অনেক তাড়াতাড়ি মারা যায়।  মেয়েরা যদি ধপধপিয়ে হাঁটে এটা তার স্বামীর জন্য অমঙ্গল। 

এ বিষয়ে একটি প্রবাদও আছে আমাদের সমাজে-

ধপ ধপায়ে হাঁটে নারী

চোখ পাকায়ে চায়

অল্প বয়সে সেই নারীর

সিঁথির সিন্দুর ক্ষয়।

বিয়ের জন্য কনে দেখতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের লোকবিশ্বাস অনুসরণ করা হয়। যদি দেখা যায় কনে আগুন জ্বালাচ্ছে বা ঘর ঝাড়– দিচ্ছে কিংবা খালি কলস কাঁখে পানি আনতে যাচ্ছে তাহলে সেই মেয়ে বিয়ে করে আনলে সংসারে অশান্তির লক্ষণ। তবে কনেকে যদি দেখা যায় কলস ভরে জল আনছে, সেই মেয়ে ঘরে আনলে ঘরে সুখ-শান্তি বৃদ্ধি পাবে বলে বিশ্বাস করা হয়। 

গর্ভবতী মহিলাদেরকে ঘিরে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের লোক বিশ্বাস।  যখন সূর্যগ্রহন বা চন্দ্রগ্রহন হয়, তখন কোন গর্ভবতী মা যদি কোদাল দিয়ে মাটি কাটে তার সন্তান ঠোঁট কাটা হবে। হাঁস-মুরগীর পা কাটলে সন্তানের পা বাঁকা হয়। মাছ কাটলে কান কাটা হয়। তাছাড়া বিবাহিত মহিলাদেরকে নিয়েও রয়েছে বিভিন্ন লোক বিশ্বাস বা কু-সংস্কার। গায়ে হলুদ দেওয়া কনে দুপুর ও সন্ধ্যা বেলায় বাড়ির বাইরে বের হওয়া বের দোষের। পৌষ মাসে বৌদের বাবার বাড়িতে পাঠানোকে অমঙ্গল মনে করা হয়। যে বউ কাপড় কেঁচে কাপড় নিংড়ানো পানি পায়ে ফেলে তাতে সংসারের আয় উন্নতি কমে যায়। বিবাহিত রমনীদের বিষয়ে প্রচলিত কিছু প্রবাদ এরূপÑ

যে বা নারী নেয়ে ধুয়ে

মুখেতে দেয় পান

লক্ষী ঠাইরণ উঠে বলে

এ নারী আমারই সমান।

যে বা নারী নতুন শাড়ি পরিয়া

আয়নার দিকে চায়

অল্প বয়সে সেই নারীরও

সিঁথি সিন্দুর ক্ষয়।

স্বপ্নকে কেন্দ্র করে রয়েছে বিভিন্ন বিশ্বাস। এবং এসব স্বপ্নের সাথে সংশ্লিষ্ঠ বিশ্বাস অনুযায়ী কোন কিছু ঘটলে মানুষ স্বপ্নকে দায়ী করে। আহার যতটাই তৃপ্তিদায়ক হোক না কেন তা যদি হয় স্বপ্নের মাঝে তাহেল পেট খারাপ হবে এটা আমাদের লোক বিশ্বাস। মাছ ধরাটা বেশ মজার, কিন্তু কেউ যদি স্বপ্নের মাঝে মাছ ধরে সেটা বিপদের আলামত হিসাবে গন্য করা হয়। কেউ যদি তার স্বপ্নে তার নিকট জনের মৃত্যু দেখে তবে ধরে নেওয়া হয় দূরের কারো মৃত্যু হবে। পক্ষান্তরে যদি অচেনা কারো মৃত্যু ঘটে তাহলে মানুষের বিশ্বাস অতি আপন কারো মৃত্যু হবে। স্বপ্নে সাপের উপস্থিতি দেখলে শত্রæর আগমন ঘটে। ঘোড়ার স্বপ্ন দেখলে আজরাইলের ভীতি মনে জেগে ওঠে। স্বপ্নে যদি কেউ নিজেকে উড়তে দেখে তাহলে এটা সুখের লক্ষণ। স্বপ্নে দাঁত পড়া শিশুদের মৃত্যুর আলামত হিসাবে বিশ্বাস করা হয়। আবার মাড়ি পড়লে বয়স্কদের মৃত্যু হবে এটাই একটি লোকজ বিশ্বাস। 

অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, দোকানীরা তাদের ব্যাবসায়ীক মালামাল সালাম করে থাকে। খেলোয়াড় মাঠে প্রবেশ করার আগে মাঠ সালাম করে। রিকশা চালক কিংবা গাড়ি চালককে দেখা যায়, গাড়ি চালানোর পূর্বে সালাম করে নিতে। এসবগুলো ক্ষেত্রই প্রাপ্তি কিংবা বিপদমুক্তির আশা। এবং তা হয় প্রচন্ড লোকবিশ্বাস থেকেই। এছাড়া ব্যবসায়ীদেরকে দেখা যায় তাদের মালামাল প্রথম বিক্রির সাথে সালামের ব্যবহার দেখা যায়। যেটা হলো বউনি। অর্থাৎ বউনির টাকাকে সালাম করলে সারাদিন বেচাকেনা আশানুরূপ হবে। তাছাড়া দোকানী বা ব্যাবসায়ীদের মাঝে দেখা যায় প্রথম গ্রাহককে কোনভাবেই খালি হাতে ফিরে যেতে দেওয়া যাবে না। তাতে লোকসান হলেও। দোকানীর বিশ্বাস গ্রাহক খালি হাতে ফিরে গেলে পরে আর বেচাকেনা ভালো হবে না। 

বাড়ি করার ক্ষেত্রে মানা হয় কিছু নিয়ম। যেমন কেউ পাকা বাড়ি করলে বাড়ি পোতা গাথার সময় এক হাত মাটির নীচে সোনা, রূপা, পান ও সুপারী দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে লোক বিশ্বাসটা এমন যে, এই কাজটি সমাধা করলে বাড়িটি কোনরূপ দোষমুক্ত থাকবে এবং বাড়ির শান্তি বজায় থাকবে।      

এরূপ আরো অনেক লোক বিশ্বাস রয়েছে আমাদের সমাজে । এসব বিশ্বাসে রয়েছে দৃঢ় আস্থা ও বিশ্বাস। এসব বিশ্বাসে চিড় ধরানো এতটা সহজও নয়। তবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত মানসিকতার কাছে কিছু লোকশ্বিাস ফিকে হয়ে যাচ্ছে লোক । যেমন আগেকার দিনে জ্বিন পরীদের আছর করার ঘটনার ব্যপকতা থাকলেও মানুষের আধুনিকতার কাছে জয় হচ্ছে বিজ্ঞানেরই। 

তথ্যপ্রদানকারীঃ

এক

তরঙ্গীনি বিশ্বাস

স্বামীঃ মৃত 

বয়সঃ ৬৫ বছর

গ্রামঃ দোয়ার পাড়

উপজেলা ও জেলাঃ মাগুরা

দুই

মোছাঃ পারুল বেগম

স্বামীঃ আব্দুল জলিল বিশ্বাস

বয়সঃ ৫০ বছর

গ্রামঃ মাজগ্রাম

উপজেলা ও জেলাঃ মাগুরা

মন্তব্য: