1. স্মরণীয় বরণীয়

শতদল রায় (১৯৪৮ – ২০১৮)

মাগুরা শহরের বিশিষ্ট কণ্ঠশিল্পী ও সঙ্গীত শিক্ষক শতদল রায় ১৯৪৮ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর পৈত্রিক ভিটা মাগুরা জেলার সদর উপজেলার আঠারখাদা ইউনিয়নের বাঁশকোঠা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে ১৯৬০ সালের দিকে মাগুরা পৌরসভার নতুন বাজারস্থ নিজস্ব বাসাবাড়িতে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। তাঁর পিতার নাম শরৎ চন্দ্র রায় এবং মাতা কালিদাসী রায়। তিনি ছিলেন বাবা-মার প্রথম সন্তান। পারিবারিকভাবে সংগীত অনুরাগী হওয়ায় পিতার নিকট সঙ্গীত বিষয়ে প্রথম হাতেখড়ি নিয়ে তিনি সংগীত চর্চা শুরু করেন। তারপর থেকে তৎকালীন ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গুণী শিক্ষকদের কাছ থেকে সঙ্গীতের বিভিন্ন বিষয়ের উপর তালিম গ্রহণ করে উচ্চাঙ্গ সংগীত, নজরুল সংগীত, রবীন্দ্র সংগীত, আধুনিক গান ইত্যাদি বিষয়ে পারদর্শী হয়ে ওঠেন। পরবর্তীতে নিজেকে সংগীত শিক্ষক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন।

শতদল রায় ১৯৬৪ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন। এরপর আর সাধারণ শিক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। তখন থেকেই নিয়মিত শিল্পী হিসেবে সংগীত পরিবেশন করে সুনাম অর্জন করেন। ১৯৬৮ সালে শ্রীমতি গৌরী রায়ের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তিনি দুই পুত্র ও দুই কন্যা সন্তানের জনক। তাঁর প্রতিষ্ঠিত সংগীত কেন্দ্র স্মৃতি সংঘ সংগীত বিদ্যালয়’। খেলাঘর’ নামে আরও একটি সংগীত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও অন্যান্য বিভিন্ন বেসরকারী সংগীত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেন। ১৯৯৯ সালে তিনি গ্রামার ও উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত বাের্ড, ঢাকা হতে সঙ্গীতে প্রথম বিভাগে মাস্টার্স সার্টিফিকেট প্রাপ্ত হন। মৃত্যুর কিছুদিন পূর্ব পর্যন্তও তিনি নিজেকে সংগীত শিক্ষক হিসাবেই নিয়ােজিত রাখেন। শিক্ষক জীবনে তাঁর অনেক ছাত্র-ছাত্রী আছেন যাদের মধ্যে-নিজ পুত্র সমীরণ রায় ও সমর রায়, বিমল রায়, মিতা দত্ত, তুরান মুন্সী, রিনা হায়দার, ড. লাভলুসহ আরও অনেকে উল্লেখযোগ্য। দীর্ঘ সংগীত জীবনের পর অবশেষে তিনি গত ২ এপ্রিল, ২০১৮ খ্রি. তারিখে নিজ বাসাবাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন।

মন্তব্য: