1. স্মরণীয় বরণীয়

আজীজুল হক (১৯৩০- ২০০১)

কবি আজীজুল হক ১৯৩০ সালের ২ মার্চ তারিখে মাগুরা জেলার (তৎকালীন বৃহত্তর যশোর জেলার মাগুরা মহকুমা) শ্রীপুর উপজেলার তারাউজিয়াল গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। পিতা মুন্সী মোহাম্মদ জবেদ আলী, মাতা রহিমা খাতুন। প্রাথমিক শিক্ষা বর্তমান আমতৈল বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে। শ্রীপুর মহেশচন্দ্র উচ্চ ইংরেজি স্কুল থেকে মেট্রিক পাশ করেন এবং বাগেরহাট পিসি কলেজ থেকে ১৯৪৯ সালে আই এ পাশ করেন। তিনি ১৯৫১ সালে ঢাকা কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৫৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৫৭ সালে তিনি সাতক্ষীরা ডিগ্রি কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন। ১৯৫৮ সালে তিনি যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন মহাবিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে যোগদান করেন। ১৯৬২ সালে আজীজুল হক সাতক্ষীরা জেলার সুলতানপুর গ্রামের সেলিনা বেগমের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ১৯৮৮ সালে তিনি তার অধ্যাপনা জগতের ইতি টানেন।

পঞ্চাশের অন্যতম খ্যাতিমান কবি আজীজুল হক। তার প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয় সওগাত পত্রিকায়। এসময় কলকাতার ইত্তেহাদ পত্রিকায়ও তার লেখা নিয়মিত প্রকাশ হতে থাকে। ইত্তেফাক, আজাদ, সংবাদ, দ্যুতি প্রভৃতি পত্রিকায় তার অগনিত কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও কলকাতার সীমান্ত ও পরিচয় পত্রিকায় তার অনেক লেখা প্রকাশিত হয়। ১৯৬৮ সালে তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্ধ ‘ঝিনুক মুহূর্ত সূর্যকে’ প্রকাশিত হয়। দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘বিনষ্টের চিৎকার’ ১৯৭৬ সালে, তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘ঘুম ও সোনালী ঈগল’ ১৯৮৯ সালে এবং ১৯৯৪ সালে ‘আজীজুল হকের কবিতা’ প্রকাশিত হয় হয়। ১৯৮৫ সালে তাঁর ‘অস্তিত্ব চেতনা ও আমাদের কবিতা’ শিরোনামের প্রবন্ধটি বাংলা একাডেমি প্রকাশ করে। কবিতার পাশাপাশি আজীজুল হক বেশকিছু গান, নাটক, গীতিনাট্য ও ছায়ানাট্য রচনা  করেন যা বিভিন্ন সময়ে মঞ্চস্থ হয়েছে। 

বাংলা সাহিত্যে অনন্য অবদানের জন্য কবি আজীজুল হক বিভিন্ন পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮৯), যশোর সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার (১৯৮৬), মধুসূদন একাডেমি পুরস্কার (১৯৮৯), চাঁদের হাট পদক (১৯৯৬) সহ আরো অনেক পুরস্কার। 

২০০১ সালের ২৭ আগস্ট তিনি পরলোক গমন করেন। যশোর কারবালাস্থ গোরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।   

মন্তব্য: