1. স্মরণীয় বরণীয়

মোঃ মাহবুব হোসেন মিয়া (১৯৪০-২০০৮)

মােঃ মাহবুব হােসেন মিয়া ১৯৪০ সালের ৬ জানুয়ারি মাগুরা সদর উপজেলাধীন হাজীপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মােঃ মকবুল হােসেন ও মাতার নাম কুটিরন নেছা। পিতার অসুস্থতায়। সংসারে অভাব অনটনের অন্ত ছিল না। ফলে মােঃ মাহবুব হােসেন মিয়ার জীবন শুরু হয় অতি দরিদ্রতার মধ্যে। নিজ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করেন এবং প্রথমে নাকোল হাইস্কুল এবং পরে বুনাগাতী স্কুলে ভর্তি হন। উক্ত হাইস্কুল থেকে ১৯৬৩ সালে এসএসসি পাস করেন। পরবর্তীতে শ্রীপুর ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হন এবং উক্ত কলেজ থেকে ১৯৭২ সালে এইচএসসি পাস করেন। ১৯৬৪ সালে তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁর স্ত্রীর নাম মােসাম্মৎ মাজেদা খাতুন।  সংসারে একটু সুখ শান্তি ফিরিয়ে দেবার মানসে এক সময় কর্মজীবনে প্রবেশ করেন। এতদঞ্চলে পুঁজিবাদী শ্রেণীর অব্যাহত শােষণ জুলুমের দরুণ সাধারণ মানুষ ছিলেন দুর্দশাগ্রস্ত। দুঃখী মানুষের আনন্দ বর্ধনের জন্য মােঃ মাহবুব হােসেন মিয়া ছিলেন নির্ভীক প্রতিবাদী কণ্ঠ। শােষণশ্রেণীর সাথে দ্বন্দ্বের পাশাপাশি তৎকালীন সরকারের সাথেও তার সদ্ভাবছিল না। ১৯৫৮ সালের শেষ দিকে আইয়ুব খান সাহেবের মার্শাল ল’র বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন ফলে মােঃ মাহবুব হােসেন মিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরােয়ানা জারি হয়। তাঁকে সরকার ধরতে ব্যর্থ হলে- শেষ পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করে। এ সময় তিনি দীর্ঘদিন পালিয়ে বেড়ান। অবশেষে আইয়ুব খান সাহেবের পতন হলে তিনি আবার গ্রামে ফিরে আসেন। এ সময় তিনি জীবন জীবিকার তাগিদে ব্যবসায় নিয়ােজিত হন।  ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় তিনি পাকসেনাদের বিরুদ্ধে বীর সৈনিকের মতাে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েন। দেশ ও জাতির কল্যাণে প্রতিবাদ করতে এ কলমসৈনিক কখনো কলম চালনা করতে ভয় পাননি। তাঁর লেখার মাধ্যমে জাতি, ধর্ম, দেশ ও সৃষ্টির প্রতি ভক্তি একাগ্রতা তাঁর মূল উদ্দেশ্যে স্মরণ করিয়ে দেয়। দরিদ্রতার শত বাধা অতিক্রম করে তিনি কোনো রকম তাঁর দিনগুলাে অতিবাহিত করে ২০০৮ সালের এপ্রিল মাসে ইন্তেকাল করেন।

তার প্রকাশিত গ্রন্থ : ১. রাজনীতি ও রাজনীবিদ ২. তারুণ্যের আত্মনিবেদন ৩. ইসলাম ধর্মে নারী জাতির মূল্যায়ন ৪. বাস্তবের ঝুলি হতে ৫. বাঙালীর হৃৎপিও শেখ মুজিব ৬. পথের দিশা’ ইত্যাদি। এছাড়াও মােঃ মাহবুবু হােসেন মিয়ার প্রায় ২০টি অ-প্রকাশিত পাণ্ডুলিপি রয়েছে : যেমন : আনন্দ ভুবন, পথে হল মৃত্যু, বিচিত্র চিত্র, স্মরণীয়, অহংকার, নতুন জীবনে স্বাদ, অপূর্ব তৃপ্তি, ভুল বুঝলে; উত্তপ্ত কামনা ইত্যাদি।

মন্তব্য: