1. স্মরণীয় বরণীয়

চন্দ্র শেখর কর বিদ্যাবিনোদ (১৮৭০-১৯৫৪)

উপন্যাসিক ও কবি বাবু চন্দ্র শেখর কর ১২ই নভেম্বর, ১৮৭০ সালে মাগুরা জেলার সদর উপজেলাধীন মির্জাপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম বাবু সিধেইল চন্দ্র কর ও মাতার নাম শ্রীমতি চন্দ্রিমা দেবী কর। চন্দ্র শেখর কর-এর ঠাকুমা, চন্দ্র শেখর করকে আদর করে ‘চন্দ্রবাবু’ নামে ডাকতেন, ঠাকুমার দেয়া ‘চন্দ্রবাবু’ নামেই তিনি অত্র অঞ্চলের মানুষের কাছে পরিচিত ছিলেন। শৈশবকাল থেকেই চন্দ্র শেখর কর ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী ও ধীর-স্থীর প্রকৃতির। নিজ পরিবার থেকেই তিনি তার পিতার তত্ত্বাবধানে ইংরেজি ও সংস্কৃতি বিদ্যা অর্জন করেন।

তার প্রাথমিক শিক্ষাজীবন শুরু হয় শিবরামপুর নিম্ন প্রাথমিক পাঠশালায়। মাগুরা মডেল হাইস্কুল থেকে ১৮৮৯ সালে তিনি কৃতিত্বের সাথে এন্ট্রান্স পাস করেন। পরবর্তীতে তিনি কলকাতার মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশনে এফ এ ক্লাসে ভর্তি হন এবং উক্ত ইনটিটিউশন থেকে বৃত্তিসহ এফএ পাস করেন। পরবর্তীতে তিনি কলকাতা সিটি কলেজে বিএ ক্লাসে ভর্তি হন এবং উক্ত কলেজ থেকে বৃত্তিসহ বিএ পাস করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এমএ এবং আই.সি.এস পাস করেন।  মুর্শিদাবাদের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে যােগদানের মাধ্যমে তিনি কর্মজীবনে প্রবেশ করেন। তিনি কর্মজীবনে একের পর এক কর্মকাণ্ডে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে তিনি ভারতের কৃষ্ণনগরে গিয়ে স্থায়ীভাবে বসাবস করেন। তিনি তৎকালীন সময়ে বৃটিশ সরকারের অধীনে একজন পদস্থ কর্মকর্তা থেকেও আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে রচনা করতেন কবিতা, উপন্যাস। হাইস্কুল জীবনে তিনি তার পিতার বন্ধু বাবু হমচন্দ্র মুখার্জী ও বাবু সারদাচরণ বোসকে পেয়েছিলেন প্রধান শিক্ষক হিসাবে। মূলত এই দু’জন সাহিত্যমনা ব্যক্তির উৎসাহ ও উদ্দীপনায় চন্দ্র শেখর কর- এক সময় সুন্দর কবিতা লিখতে শুরু করেন। ছাত্রজীবনে তিনি যুক্তাক্ষর বিহীন ‘শারদাবকাশ’ নামক একখানি কাব্য এবং পরবর্তীতে অনেকগুলি উপন্যাস রচনা করেন।

তাঁর প্রকাশিত উল্লেখ্যযোগ্যগ্রন্থ : অনাথ বালক, সুরবালা, সৎ কথা, আনাজ, পাপের পরিণাম, নবগঙ্গার ঘাট ইত্যাদি। তাঁর সাহিত্যকর্মের জন্য তৎকালীন নবদ্বীপের পণ্ডিতমণ্ডলী তাঁকে বিদ্যাবিনোদ উপাধিতে ভূষিত করেন। উপন্যাসিক ও কবি চন্দ্র শেখর কর ১৯৫৪ সালের শেষ দিকে কৃষ্ণ নগরে নিজবাড়িতে পরলোক গমন করেন।

মন্তব্য: