https://youtu.be/gHpumyUIR-8

ছান্দড়া জমিদার বাড়ি মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার তালখড়ি ইউনিয়েনের ছান্দড়া গ্রামে। এখান দিয়ে বয়ে যাওয়া বেগবতী নদীটি এখন প্রায় মৃত। অনেকটাই দখলে। তবে দু চার জন প্রবীণ ছাড়া কেউ নদীটিকে এই নামে চেনে না। সবাই নদীটিকে ব্যাঙ নদী বলে জানে। এই নদীটি একদিকে চিত্রা, আরেকদিকে ফটকী নদীতে মিশেছে।

ছান্দড়া জমিদার বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন জমিদার অলঙ্ঘন মোহন দেব রায়। তার কোনো সন্তান ছিল না। তার আরেক ভাই সুরেন দেব রায়ও ছিলেন নিঃসন্তান। আবার তাদের ছোটভাই অবনীমোহন দেব রায় ছিলেন চিরকুমার। অবনী মোহন দেব রায় শেষ জমিদার হিসেবে ছিলেন। তিনি মারা যান ১৯৭৩ সালে। অবশ্য পঞ্চাশের দশকেই জমিদারি প্রথা বিলোপ হয়। এই জমিদাররা মূলত নলডাঙার রাজাদের কাছ থেকে জমিদারি পেয়েছিলেন। এদের সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা যায় না। তবে এদের খুব প্রতাপ ছিল। বেগবতী নদীর পাড়ে এদের কয়েকটি হাতি বাঁধা থাকতো। এখানকার প্রাইমারি স্কুলটি (১৯৫৭ সালে প্রতিষ্ঠিত) এই জমিদার বাড়ির অবদান। জমিদারদের একটি দুর্গা মন্দির ও একটি কালীর বেদী আছে। জনশ্রুতি আছে, জমিদার অলঙ্ঘন মোহন দেব রায় জঙ্গল পরিস্কার করতে গিয়ে এই বেদীর দেখা পান, পাশে কিছু খুলি ও হাড় পাওয়া যায়। ধারণা করা হয় এটি ছিল কোনো তান্ত্রিকের আস্তানা। পরে ওই রাতে কালী দেবী জমিদারকে স্বপ্নে আদেশ করেন পূজা দেবার জন্য। সেই থেকে ওখানে পূজা হয়ে আসছে। এছাড়া এখানে জমিদারদের পুকুরও রয়েছে। জমিদার বাড়ির কিছু অংশ জঙ্গলের মধ্যে কালের স্বাক্ষী হয়ে টিকে আছে।

এখানে আরেকটি কথা প্রচলিত আছে যে জমিদার বাড়ির পাশেই ক্রিকেটার সৌরভ গাঙ্গুলীর আদি বাড়ি। কিন্তু এটি পুরোটাই ভ্রান্ত। তবে এখানে অন্য আরেক গাঙ্গুলী পরিবার ছিল। কাকতালীয়ভাবে সে বাড়িতেও সৌরভ নামে একজন ছিল। মজার বিষয় হলো তারাও এখন কোলকাতার বেহালাতে বসবাস করেন। এই সৌরভের বাবার নাম ছিল রামাপ্রসাদ গাঙ্গুলী এবং মায়ের নাম ছিল গীতা রানী গাঙ্গুলী। তাদের ভিটাটি গাঙ্গুলীদের ভিটা নামে পরিচিত। এখন এটি বনজঙ্গল ছাড়া কিছু নয়।

মন্তব্য: