1. ইতিহাস

জেলা মাগুরার ইতিহাস ও ঐতিহ্য

গোলাম মোস্তফা সিন্দাইনী

মাগুরা একটি ওরুত্বপূর্ণ জেলা। ইতিহাস, ঐতিহা শিল্প, সাহিত্য, শিক্ষা সংস্কৃতি, সংগ্রাম, আন্দোলন, রাজনীতি, মুক্তিযুদ্ধ প্রভৃতিতে জাতীয় গৌরবের প্রেক্ষাপটে বিশেষ অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছে মাগুরা জেলা। মাগুরায় মহকুমা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৪৫ সালে।

আযতন: মাওরা জেলার আয়তন ১.০৪৮.৬১ বর্গ কিঃ মিঃ (৪০৪.৮৭ বর্গ মাইল।।

অবস্থান: ২৩০-২৯ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯০-২৬ পুর্ব দ্রাঘিমাংশের ভূভাগই মাগুরা।

সীমানা: উত্তর পূর্বে রাজবাড়ী জেলা, দক্ক্ষিণে যশোর ও নড়াইল জেলা এবং পশ্চিমে ঝিনাইদহ জেলা।

ইউনিয়ন ও গ্রাম: মাগুরা জেলায় ৩৬টি ইউনিয়ন, ১টি পৌরসভা এবং ৭১৯টি গ্রাম রয়েছে।

থানা: জেলায় থানার সংখ্যা মােট ৪টি। এগুলাে হচ্ছে- মাগুরা সদর, মােহাম্মদপুর, শ্রীপুর ও শালিখা থানা।

প্রধান নদনদী:  নবগঙ্গা, মধুমতি, গড়াই, ফটকী, চিত্রা ও হানু নদী।

মাগুরার নামকরণ: “খুলনা শহরের আদিপর্ব” গ্রন্থের লেখক ঐতিহাসিক আবুল কালাম শামসুদ্দিনের মতে, মরা গাঙ থেকে মাগুরা নামের উৎপত্তি। মরা গাঙকে আঞ্চলিক ভাষায় মরগা বলে। তিনি আরাে যুক্তি দেখিয়েছেন যে, মাগুরা অঞ্চল দিয়ে এক সময় মূল গঙ্গার প্রবাহ ছিল। নদী প্রবাহ ঘন ঘন পরিবর্তন ও বিবর্তনের কারণেই অনেক প্রবাহমান নদী উত্তরা পালিবাহিত স্রোতের কারণে চরা ভূমিতে পরিণত হয়ে দূরে সরে যায়। আবার চরাভূমিতে যখন বসতি গড়ে ওঠে তখন হয়তাে দূরের নদীর প্রবাহ ক্রমান্বয়ে চরাভূমিতে স্পর্শ করে আসল জায়গা দখল করে নেয়। নদীর গতিপথ পরিবর্তন সম্পর্কে মিঃ ফারগুসন বলেছেন “নদী তার গতি পথে তীর ভূমির উচ্চতা বৃদ্ধি করে নিম্নভূমির মধ্য দিয়ে নতুন আবিষ্কারের চেষ্টা করতে থাকে। নিম্ন উচ্চতর করা নদীর ধর্ম” মাগুরার ক্ষেত্রেও এমনটি ঘটেছিল বলে মনে করা হয়। আবার অনেকে মনে করেন, মাগুরার নবগঙ্গা নদী এক সময় মগ জলদস্যুদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে ছিল। ইতিহাসে উল্লখ আছে, ধর্মদাস নামের জনৈক মগ সুদুর আরাকান থেকে এসে আজকের মাগুরার পাশ্ববর্তী মধুমতি নদীর ধারে খুলুমবাড়ী মৌজা সহ সংলগ্ন এলাকা দখল করে। তাকে মগ জায়গীর বলে আখ্যায়িত করা হয়। ঐ সময় মগদের অত্যাচারে লােকজন অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে। পরে মগরা বিতাড়িত হয়। গড়ে ওঠে বসতি। সেই মগ এবং মগরা থেকে মাগুরা” নামের উৎপত্তি। আরো জনশ্রুতি আছে যে, মাগুরার খাল বিলে এককালে প্রচুর মাগুর মাছ পাওয়া যেত। সেই মাগুর মাছের প্রসিদ্ধি থেকে মাগুরা” নামকরণ হয়েছে।

প্রাচীন মাগুরা: মাগুরা জেলা প্রাচীন বুড়ােল দ্বীপের অধীন ছিল। এছাড়া মাগুরা এক সময় গঙ্গা দ্বীপের অধীনও ছিল। বিজয় সেনের আমলে মাগুরা বৌদ্ধ ধর্ম অধ্যুষিত ছিল। পাণ্ডু রাজত্ব মাগুরাসহ দক্ষিণে বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। প্রথম ও দ্বিতীয় শতাব্দীতে কুমার নদের মোহনায় এবং মোহম্মদপুরের এ্যালাংখালীতে বন্দর ছিল। মাগুরা জেলায় প্রথম জনবসতি শুরু হয়েছিল কুমার নদের মোহনায়।

আধুনিক আমল: মোঘল সাম্রাজ্যোর শেষ আর ইংরেজ রাজত্বের শুরু থেকে মাগুরার আধুনিক আমলের সূচনা বলে ধরা হয়। এ সময়েই সৃষ্টি হয়েছে মাগুরা শহর।

থানা স্থাপন: মাগুরা সদরে থানা স্থাপিত হয় ১৮৭৫ সারের ১৬ই নভেম্বর। এরও আগে মহম্মদপুর থানা স্থাপিত হয় ১৮৬৯ সালের ২৪শে নভেম্বর। শ্রীপুর থানা স্থাপিত হয় ১৮৬৯ সালের ২৮শে জানুয়ারী এবং ১৮৬৭ সালে শালিখা থানা স্থাপিত হয়।

মহকুমা সৃষ্টি: মাগুরায় মহকুমা স্থাপিত হয় ১৮৪৫ সালে। প্রথম মহকুমা প্রশাসক (ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট) ছিলেন মিঃ ককবার্ণ। মহকুমা স্থাপনকালে মাগুরায় একটি পুলিশ ফাড়ি ছিল।

জেলা সৃষ্টি: মাগুরা জেলা সৃষ্টি হয় ১৯৮৪ সালের ১লা মার্চ, বাংলা ১৭ ফাল্পুন ১৩৯০ সাল বৃহষ্পতিবার। এ দিন মাগুরার এস,ডি,ও অফিস প্রাঙ্গণে (বর্তমান কালেক্টরেট ভবন) আনুষ্ঠানিকভাবে শিলান্যাশের মাধ্যমে মাগুরাকে জেলা হিসাবে ঘােষণা করেন তৎকালীন শ্রম ও জনশক্তি মন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল (অবঃ) কে, এম, আমিনুল ইসলাম।

মাগুরা জেলা পুলিশের কার্যক্রম শুরু: মাগুরা জেলায় উন্নত হওয়ার সাথে সাথে মাগুরা জেলা পুলিশের কার্যক্রমও শুরু হয়। এ পর্যায়ে মাগুরা শহরের জেলা পাড়ায় “হক ভিলা” নামীয় দ্বিতল ভাড়া বাড়ীতে মাওল সুপারের অফিস প্রথম চালু করা হয় ইংরেজী ১লা মার্চ ১৯৮৪ তারিখে। পরে ১৯৮৯ সালে নবনির্মিত মাগুরা পুলিশ লাইনের প্রধান দ্বিতল ভবনে পুলিশ সুপারের অফিস স্থানান্তরিত হয়। মাগুরা এস,ডি,ও অফিস কাম ট্রপজারী ও ফৌজদারী কোর্টের পরিত্যাক্ত ভবন ভেঙ্গে সেখানে বর্তমান এস,পি অফিস নির্মাণ করা হয়। পুলিশ অফিসের নিজস্ব নতুন ভবনে ১৯৯০ সালের ৩০শে এপ্রিল থেকে এস,পি’র দপ্তর সহ পুলিশ অফিসের কার্যক্রম চলতে থাকে। অবশ্য এ নতুন ভবনের দ্বারোদঘাটনের আনুষ্ঠানিকতা পরে ইং ১২/৫/৯০ তারিখে শিলান্যাসের মাধ্যমে সম্পন হয়।

মাগুরায় জেলা ও দায়রা জজ আদালত স্থাপন: মাগুরা মহকুমা থেকে জেলায় উন্নীত হলেও আইনগত কিছু নিয়মনীতি ও আনুষ্ঠানিকতা পালন শেষে জেলা ও দায়রা জজ আদালত চালু করতে সময়ের প্রয়ােজন হয়। আর সে জন্যে মাগুরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের কার্যক্রম মূলতঃ ১লা সেপ্টেম্বর ১৯৮৪ তারিখ থেকে শুরু হয়। সাবেক মুনসেফ আদালতের বিশাল ভবনের একটি এজলাশের কিছু পরিবর্তন সাধন করে সেখানে এ আদালতের কাজ চলতে থাকে। পরবর্তীতে পুরাতন মুনসেফ আদালত ভেঙ্গে একই স্থানে নির্মিত হয়েছে জেলা ও দায়রা জজ আদালতসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আদালতের জন্য বিশাল অট্টালিকা। বর্তমানে সেই নিজস্ব ভবনে চলছে এ আদালতের কাজ।

ইসলাম প্রচার: মাগুরা জেলায় প্রথম ইসলাম প্রচার কখন শুরু হয়েছিল তার সঠিক তথ্য পাওয়া যায় না। সুবেদার় আজিমুসশানের সময়ে মুহম্মদ খাঁ নামক একজন ইসলাম প্রচারক মাগুরা জেলায় মােহাম্মদপুর থানা এলাকায় এসেছিলেন। হযরত শাহ আলী বাগদাদী দরবেশের অধংস্তন শাহ হাফিজ মাগুরা জেলায় আলােকাদয়া অঞ্চলে ইসলাম ও ইসলামী শিক্ষা বিস্তারে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছিলেন। নবাব আলীবর্দী খার  শ্যালক মােল্যা শের আলীর ভগ্নিকে শাহ হাফিজ বিয়ে করে ছিলেন। শ্রীপুর থানার দ্বারিয়াপুর গ্রামে আরবদেশ থেকে একদল ইসলাম প্রচারক এসেছিলেন। তাদের মধ্যে ছিলেন জায়েদ গাজী, মুহম্মদ গাজী, হুসাইন গাজী, আজ্জাদ গাজী, মওদুদ গাজী, মােবাশ্বার গাজী, মুমীন গাজী, আমজাদ গাজী, সাবের গাজী ও আব্দুল্লাহ গাজীর নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোেগ্য। এই ইসলাম প্রচারক দল ১৪০০ সালের পরে কোন এক সময়ে এসেছিলেন বলে অনেকে অনুমান করেছেন। এই সময়ে মােহাম্মদপুর থানার সিন্দাইন গ্রম এলাকায় হযরত আবেদুন নামে একজন ইসলাম প্রচারক এসেছিলেন। শায়েস্তা খাঁর আমলে আজকের নিজনান্দুয়ালী ও পারনান্দুয়ালী গ্রামে নাদির আলী নামে একজন ইসলাম প্রচারক এসেছিলেন।

ভাষা আন্দোলন: ১৯৪৮ ও ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে মাগুরার ছাত্রজনতা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ১৯৪৮ সালের ভাষা আন্দোলনে জড়িত ছিলেন বদিউল আলম মোংলা ভাই, লুৎফর রহমান, নাসিরুল ইসলাম আবু মিয়া, আব্দুল জলিল খান, সালাম মুনশী প্রমুখ। এছাড়া ১৯৫২ সালের আন্দোলনে যারা সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন তারা হলেন অধ্যাপক মুহম্মদ আবু তালিব, আবু মিয়া, আব্দুল জলিল খান প্রমুখ। ১৯৫৯ সালের ২০শে ফেররুয়ারী মাগুরা সরকারী কলেজ প্রাঙ্গনে প্রথম শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছিল। মাগুরায় প্রথম শহীদ মিনার নির্মাণ কাজে অনেক প্রতিকুল অবস্থা মােকাবেলা করে অধ্যাপক কাজী সাইফুজ্জামান মন্নু, মােঃ লুৎফর রহমান(বর্তমান এ্যাডঃ), আশফাকুল ইসলাম গুলু, গােলাম মওলা প্রমুখ বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধ: ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে মাগুরা জেলার মুক্তিযােদ্ধা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও জনগণ ব্যাপক ভূমিকা পালন করেছেন। মাগুরা ৮নং সেক্টরের অধীন ছিল। পাকিস্তানী সেনা বাহিনী ও তার দোসর বাহিনীর সাথে মুক্তিযােদ্ধারা যুদ্ধ করে কেউ শহীদ হয়েছেন, কেউ আহত হয়েছেন, আবার অনেকেই শত্রুসেনা খতম করে বিজয়ীর বেশে সামনে এগিয়ে গেছেন। একাত্তরের মাগুরার উল্লেখযােগ্য যুদ্ধের মধ্যে রয়েছে মােহাম্মদপুরের যুদ্ধ, বিনােদপুরের যুদ্ধ, গঙ্গারামপুরের যুদ্ধ, নহাটায় যুদ্ধ, শ্রীপুর থানা যুদ্ধ, জয়রামপুর যুদ্ধ, বারই পাড়ার যুদ্ধ, খামারপাড়ার যুদ্ধ, কাদির পাড়ার যুদ্ধ, মাগুরা আনসার ক্যাম্পের যুদ্ধ, রাজাপুরের যুদধ, ইছাখাদার যুদ্ধ, নাকোলের যুদ্ধ, টুপিপাড়ার যুদ্ধ, সীমাখালীর যুদ্ধ, মাগুরা বিজয়ের যুদ্ধ প্রভৃতি। ১৯৭১ সালে ৭ই ডিসেম্বর মাগুরা পাকিস্তানী সেনা বাহিনীর কাছ থেকে মুক্ত হয়।

উপাধিপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা:  মাসুরুর-উল হক সিদ্দিকী কমল সিদ্দিকী (বীর উত্তম), গোলাম ইয়াকুব (বীর প্রতীক), শহীদ আব্দুল মোতালেব (বীর বিক্রম), নৌবাহিনীর লেঃ (অবঃ) জালাল উদ্দিন (বীর উত্তম) এবং সৈয়দ আমীরুজ্জামান ইপিআর (বীর বিক্রম)।

মন্ত্রী ছিলেন:  মৌঃ আব্দুল খালেক, মােঃ সােহরাব হোসেন, মেজর জেনারেল (অবঃ) এম, মজিদ উল হক, নিতাই রায় চৌধুরী, অধ্যাপক সৈয়দ আলী আহসান (প্রাক্তন শিক্ষা উপদেষ্টা) এবং শ্রী বীরেন শিকদার।

সংবাদপত্র: অবলুপ্ত হিন্দু মুসলামান সশ্মিলনী পত্রিকা (১৮৮৬), সাপ্তাহিক আনন্দ, মাগুরা গেজেট (১৯২৯), নবগঙ্গা (১৯৪১), সাপ্তাহিক বাংলার ডাক (১৯৭২), পাক্ষিক নবকাল (১৯৭২), সাপ্তাহিক গণমন (১৯৭২), পাক্ষিক অগ্নিশিখা (১৯৭২), সাপ্তাহিক রূপসী বাংলা (১৯৭২), গ্রাম বাংলা (১৯৭২), মতামত (১৯৭২), মধুমতি (১৯৭৮)। মাগুরা জেলায় উন্নীত হওয়ার পর থেকে সরকারী নিয়মনীতি অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে সাপ্তাহিক মাগুরা বার্তা (১৯৮৫), সাপ্তাহিক গণ সংবাদ, সাপ্তাহিক অংগীকার, দৈনিক খেদমত, সাপ্তাহিক গ্রামীণ বাংলা, মাগুরা বৃত্তান্ত, দৈনিক মাগুরা পত্রিকার প্রকাশনা শুরু হয়।

সাংবাদিক: মাগুরা জেলায় বেশ কিছু সংখ্যক খ্যাতিমান সাংবাদিক রয়েছেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযােগ্য হলেন- কালী প্রসন্ন রায়, প্রিয়নাথ মুখার্জী, আশুতােষ গাঙ্গুলী, বিশেশ্বর মুখােপাধ্যায়, নিমাই ভট্টচার্য, শহীদ সিরাজ উদ্দিন হোসেন। এছাড়া বর্তমানে মাগুরা জেলায় বেশ কিছু সংখ্যক সাংবাদিক দৈনিক/ সাপ্তাহিক সংবাদপত্র এবং বেতার ও টি.ভির সাথে জড়িত রয়েছেন। ১৯৬২ সালে মাগুরায় প্রেস ক্লাব গঠিত হয়। মােহাম্মদপুর, শ্রীপুর ও শালিখা থানায় প্রেসক্লাব রয়েছে বর্তমানে।

কবি সাহিত্যিক: যদুনাথ ভট্টচার্য, ফনিতূষণ তর্কবাগিশ, ডাঃ লুৎফর রহমান, পৃথীশ চন্দ্র ভট্টাচার্য, সুফী সদর উদ্দিন, প্রবোধ চন্দ্র বাগচী, আব্দুল জব্বার, সৈয়দ ফররুখ আহমদ, কাজী কাদের নওয়াজ, সৈয়দ আলী আহসান, শহীদ সিরাজ উদ্দিন হোসেন, নিমাই ভট্টাচার্য, মোঃ শরীফুল ইসলাম, আব্দুর রহমান, কামরুল মোঃ মোশাররফ হােসেন, এবাদত হোসেন, এস,এম, লুখৎফর রহমান, মোঃ আব্দুস সাত্তার, তারাপদ রাহা, শেখ হাবিবুর রহমান, মোহাম্মদ গোলাম হোসেন, সৈয়দ আলী আশরাফ, আজিজুল হক, আব্দুল লতিফ আফি আনহু, শহীদ শাহ দেওয়ান, মোঃ বদরুল আমিন খান, হাসান আব্দুল কাইয়ুম, আফসার উদ্দিন, আব্দুর রশীদ যশোরী, অমিয়কান্তি পাল, শরীফ শাহ দেওয়ান, আবু সালেহ, গোলাম মোস্তফা সিন্দাইনী, কবিয়াল হাশেম আলী, সাজ্জাদ হোসেন, সৈয়দ আলী নকী, মতিলাল ঘোষ, মুহাম্মদ নুরুল কাদির, আসকার উদ্দিন, নুরুল মোমেন, গোপালচন্দ্র হালদার, ভোলানাথ ভট্টাচার্য, গঙ্গাধর সেন রায় প্রমুখ। এ তালিকার প্রথম দিকের অনেকেই পরলোক গমন করেছেন।

ক্রীড়াবিদ: সৈয়দ আতর আলী, কাজী সাইফুজ্জামান, কাজী আহসানুজ্জামান বাদশা, কাজী আফিকুজ্জামান (বাকু), খবির উদ্দীন, সৈয়দ নাজমুল হাসান লোভন, সাকিব আল হাসান, মেহেদি হাসান উজ্জ্বল প্রমুখ।

চিকিৎসক: মাহবুবুর রহমান, অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুল মালেক, বিগ্রেডিয়ার এস,আর খান, প্রফেসর এস আকবর, অধ্যাপিকা নুরুন নাহার প্রমুখ।

কামেল পীর: গরীব শাহ দেওয়ান, মােকররম আলী, শাহসুফী আলহাজ্ব খোন্দকার আঃ হামিদ, শাহসুফী তোয়াজউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

সাত্বিক পুরষ: শ্রী জীতেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী (নেংটা সাধু) সাতদোহা আশ্রম।

রাজা: রাজা শত্রুজিৎ রায়, রাজা দেবল রায়, রাজা সীতারাম রায়।

বাউল কবি: তরিকুল্যা বিশ্বাস, জয়চাদ মওল, মহেন্দ্রনাথ বিশ্বাস।

বিপ্লবী: আশুতোষ গাঙ্গুলী, প্রিয়নাথ মুখার্জী, বিশ্বেশ্বর মুখার্জী, পূর্ণচন্দ্র চট্টপাধ্যায়।

মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক: মোঃ সোহরাব হোসেন, সৈয়দ আতর আলী, মোঃ আছাদুজামান, মীর তৈয়ব হোসেন, নাসিরুল ইসলাম আবু মিয়া, আব্দুর রশীদ বিশ্বাস, আফসার উদ্দিন মৃধা, খোন্দকার আঃ মাজেদ, আকবর হোসেন মিয়া, আলতাফ হােসেন, এ, এফ,এম, আঃ ফাত্তাহ, মােল্লা নবুয়ত আলী, মোঃ আবুল খায়ের, মোঃ রোস্তম আলী, মুনসী রেজাউল ইসলাম, আবু নাসের বাবলু, তানজেল হোসেন খান, নন্দদুলাল বংশী, সৈয়দ মাহবুবুল হক বেনু মিয়া, এস, এ, সিদ্দিকী বেবী প্রমুখ।

চলচিত্র শিল্পী: বনানী চৌধুরী, সন্ধ্যা রায, অক্ষয় নন্দী, সুশীল ভট্টাচার্য, সন্তোষ ভট্টাচার্য, হরিশ দত্ত, জগবন্ধু হালদার, দুর্গাদাস গাঙ্গুলী, সদরুল আলম পানু, মাখন অধিকারী, সুধীর ঘােষ, কামরুল হদা নীহার, আবু জোহা পিকুল, সমরেশ রায় চৌধুরী, দুলাল কুরি, শান্তিপদ শিকদার, মনােজিৎ সাহা, অঞ্জনা তালুকদার প্রমুখ।

সঙ্গীত শিল্পী: ওস্তাদ মুনসী রইসউদ্দিন, জুড়োন ঠাকুর, ওস্তাদ ধীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, ভোলা ঠাকুর, ওস্তাদ কমলেশ চক্রবর্তী, ওস্তাদ শক্তিপদ চ্যাটার্জী, ওস্তাদ শতদল রায়, মধু মঙ্গল দাস, হামিদুর রহমান, লুৎফর রহমান, চণ্ডি প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়, ওস্তাদ নরেন্দ্রনাথ সিংহ, অধ্যাপক শামসুন্নাহার মুকুল, মিহিরলাল কুরী, সবিতা চট্টোপাধ্যায়, চৌধুরী ফেনসী খালেদা বিউটি, আবু জাফর, মোসাদ্দেক আলী মিন্টু, নজরুল ইসলাম টগর, হাসিয়ারা হাসি, সৈয়দা শীলা, ফখরুল ইসলাম তুরান, বিপুল কুমার পাল প্রমুখ।

ঐতিহাসিক স্থান ও পুরাকীর্তি: পীর গরীব শাহের মাজার, আঠারোখাদার সিদ্ধেশ্বরী মঠ, রাজা সীতারাম রায়ের রাজবাড়ীর ধ্বংসাবশেষ, রাজা শত্রুজিৎ রায়ের বাড়ীর ধ্বংসাবশেষ, সাত দােয়ার ন্যাংটা বাবার সমাধি, শ্ৰীপুরের বৌদ্ধ আমলের বিরাট রাজার রাজধানীর ধ্বংসাবশেস, নিজ নান্দুয়ালী ওপারনান্দুয়ালীতে শায়েস্ত খার আমলে উপপ্রশাসক নাদির আলীর দু্র্গের ধ্বংসাবশেষ, সিন্দাইনের প্রাচীন লােহার কারখানার ধ্বংসাবশেষ, নদেরচাঁদ ঘাট, বহু নীলকুঠি, রায় নায়েবের মঠ, দেবল রাজার গড় গােপাল গ্রাম মসজিদ প্রভৃতি।

কিংবদন্তী: নদীয়ারচাঁদের ঘাট, সিন্দাইনের আয়না বড়, ঝলবিবি, পরানপুর ও পাথরঘাটা, আলম খালির ফুলিবিবি, শ্ৰীপুরের বিরাট রাজা, মেনাহাতী, ভাতারমারির বিল প্রভৃতি।

লোক সাহিত্য: মাগুরা জেলায় লােক সাহিত্যের গৌরবময় ধারা আছে। লােক কাহিনী, ধাঁধাঁ, ছড়া, মারফতি, মুর্শিদী, ধূয়া, সারি, জারী, বিয়ের গান, গাজীর গীত, বাউল গান, কবি গান প্রভৃতি। লোক কবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন মহেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, তরিবুল্লাহ বিশ্বাস, জয়চাঁদ মণ্ডল, ছেরমাতুল্লাহ মোল্যা, উজল চাঁদ, আকমল শাহ প্রমুখ।

তথ্যসহায়কঃ

১। যশোহর খুলনার ইতিহাস: সতীশ চন্দ্র মিত্র।

২। বাঙালীর ইতিহাস: সুভাষ মুখোপাধ্যায়।

৩। যশোরাদ্য দেশ: হোসেন উদ্দিন হোসেন

৪। সীতারাম: বংকিম চন্দ্র চট্টপাধ্যায়

৫। শিক্ষালয়ের ইতি কথায় যশাের: কাজী শওকত শাহী

৬। উপজেলা গেজেটিয়ার শালিখা: সম্পাদনায় মনোরঞ্জন বিশ্বাস।

৭। মাওরা সন্দর্ভ (প্রথম খণ্ড): মনোরঞ্জন বিশ্বাস।

৮। মাগুরা বার্তা (সাপ্তাহিক): সম্পাদক শরীফ আমিরুল হাসান বুলু।

এছাড়া বিভিন্ন দৈনিক, সাপ্তাহিক ও সংকলনে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রবন্ধ নিবন্ধ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।

মন্তব্য: